টাকার বিনিময়ে চুরি–ডাকাতি শেখানো হয় যে স্কুলে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লাখ টাকার বিনিময়ে শিশু–কিশোরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় চুরি–ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কাজের। এ যেন চুরি–ডাকাতির স্কুল! ভারতের মধ্যপ্রদেশে এমন তিনটি গ্রামের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, মধ্যপ্রদেশের কাদিয়া, গুলখেদি এবং হুলখেদি এই তিন প্রত্যন্ত গ্রামে শিশু–কিশোরদের রীতিমতো হাতেকলমে শেখানো হয় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ। পরিস্থিতি এমন যে, ওই গ্রামগুলোতে ঢুকতে ভয় পায় পুলিশও।
পুলিশ বলছে, ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সী কিশোরদের পরিবার থেকেই অপরাধমূলক কাজকর্মের প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে পাঠায়। অভিভাবেকরা আগে দেখা করেন এই ‘স্কুল’ গ্যাংয়ের নেতাদের সঙ্গে। সন্তানদের কারা যথাযথ প্রশিক্ষণ দেবে সেই ব্যবস্থা করার পর দুই থেকে তিন লাখ রুপি ফি পর্যন্ত দেন অভিভাবকেরা।
শিশু–কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধমূলক দক্ষতা শেখানো হয়। যেমন– পকেটমার, ভীড় এলাকায় ব্যাগ ছিনতাই, কীভাবে দ্রুত দৌড়নো যায়, কীভাবে পুলিশকে এড়িয়ে পালানো যায়, এমনকি ধরা পড়ে গেলে মার সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ানোরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এক বছর প্রশিক্ষণের পর ওই শিশু–কিশোরদের বাবা-মা গ্যাং লিডারদের কাছ থেকে বছরে তিন থেকে পাঁচ লক্ষ রুপি পর্যন্ত আয় করেন।
আরও পড়ুনমধ্যপ্রদেশের গ্রাম তিনটির অন্ধকার দিকের খবর প্রকাশ্যে আসে জয়পুরে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তদন্ত করতে গিয়ে এই অবাক করা তথ্য আসে পুলিশের কাছে। গত ৮ আগস্ট জয়পুরের একটি বিলাসবহুল হোটেলে হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ীর ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে দেড় কোটি টাকা মূল্যের গয়না ও নগদ এক লাখ রুপিসহ একটি ব্যাগ চুরি হয়। যখন বর–কনেকে আশীর্বাদ করা হচ্ছিল তখন পাত্রের মা সেই ব্যাগ রেখেছিলেন নির্দিষ্ট একটি জায়গায়। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগিয়ে চুরি করা হয় ব্যাগটি। চুরির তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে জড়িতরা কিছু কম বয়সী ছেলে।
এ ঘটনায় পুলিশের হাতে এক নাবালক আটক হয়। এরপর সামনে আসে পুরো ঘটনা। গত মার্চের আরও একটি ঘটনা এ সময় সামনে আসে। এরকম ১৮টি ঘটনার রেকর্ড পুলিশের কাছে রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে পুলিশ ওই তিন গ্রামের অপরাধী তৈরির ‘স্কুলের’ সন্ধান পায়। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন